আমি স্বাধীনতা চেয়েছিলাম বলে

মুক্তিযোদ্ধা (ডিসেম্বর ২০১২)

এনামুল হক টগর
  • ১৮
  • ৫৯
আমি স্বাধীনতা চেয়েছিলাম বলে
তোমরা আমাকে দুঃখ দিলে
আমার বেড়ে ওঠা মেধাবী তরুণ সনত্দানকে
তোমরা হত্যা করলে।
আমার স্ত্রীর বুকে তোমারা গুলি চালালে
আমার শিশু কন্যাটিকে তোমরা ধরে নিয়ে গেলে
পাশের বাড়িতে ছোট বোনটি আশ্রয় নিয়েছিল
সে আর কোনদিন ফিরে আসেনি।
কয়েক দিন পরে বাউল গফুরকে
তোমরা হত্যা করলে
গফুরের লাশের পাশে
আমার প্রিয়তম শিশু কন্যাটির লাশটি পড়ে ছিল
আমি কয়েক দিন ধৈর্য ধারণ করে আমার প্রিয়জনদেরকে
গোসল করিয়ে ধর্ম মোতাবেক
দাফনের জন্য চেষ্টা করেছিলাম।
কিন্তু শক্রদের রাইফেলের তাক করা নল
আমাকে আমার শিশু কন্যা আর
বাউল গফুরের কাছে যেতে দেয়নি।
তিন দিন ধরে আমার প্রিয়জনদের লাশ
শেয়াল কুকুর আর বিচিত্র রঙের পাখিরা খেয়ে গেলো
তোমাদের নিষ্ঠুরতা দেখে আমার বুকের ভেতরটা
দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলো।
যে সনত্দানকে আমি ভালোবেসেছিলাম মাতৃভূমির মতো
যার কথা ভেবে আমি স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতাম
যে বাউল আমাকে পরিবর্তনের গান শোনাতো
যে বোনটির নতুন সংসার বাঁধার কথা হয়েছিল
সেই সব প্রিয়জনদেরকে তোমরা হত্যা করলে
আর আমার শরীরে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দিলে
তাই আমি যুদ্ধের রণাঙ্গনে হাঁটতে থাাকলাম
আমি যখন পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছিলাম
তখন আমার সহপাঠি রিদ্দিক শহীদ হলো
শহরের বুকে টিংকু দুলাল
আর সাত্তারকে তোমরা হত্যা করলে
ওদের শরীর থেকে লাল রক্ত ঝরে গেলো
হাদল গ্রামে অসংখ্য শিশু কিশোর
আর যুবককে তোমরা হত্যা করলে
অনেক নারীকে নির্মম ভাবে ধর্ষণ করলে
নাজিরপুর ও ডেমরায় কত যুবককে হত্যা
আর হাজারো ঘর বাড়ি তোমরা পুড়িয়ে দিলে
বংশী পাড়া চন্দ্রবতী নদীর তীরে
অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে শহীদ হলো
মানিকগঞ্জের তেরশী গ্রামের জমিদার শিক্ষক
আর নিরীহ মানুষকে তোমরা হত্যা করলে
গোপালপুর শহীদ সাগর রক্তে রক্তে ভরে উঠলো
ময়না গ্রাম জলে পুড়ে ছাড়খার মৃতু্য আর মৃতু্য
দাশুরিয়া গ্রামে আয়নাল আর রহমানকে
তোমরা পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারলে
করমজা গ্রাম লাশে লাশে ভরে উঠলো
তিতাস বড়াল ভৈরবে কত মৃত দেহ ভেসে গেল
রাজধানীর পথে পথে লাশের গন্ধে
আকাশের কত চিল, কাক আর শকুন উড়লো
বাংলার প্রতিটি শহর গ্রাম দুঃখের লাল রঙে জ্বলে উঠলো
সবাই মৃতু্যর আগে আমাদের স্বাধীনতার কথা বলে গিয়েছিল
তোমাদের হত্যাযজ্ঞ দেখে
আমাদের চোখের জল আগুনে পরিণত হলো
আমরা জ্বলে উঠলাম অগি্নদগ্ধ অস্ত্র হাতে
প্রতিবাদে প্রতিরোধে যুদ্ধ করলাম
আমাদের সহপাঠি অনেক বন্ধুরা শহীদ হলো
তারা আগামী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলে গেলো
আমরা বিদায় তোমরা বেঁচে থাকো
তোমাদের রক্তের ধমনীতে প্রবাহিত হবে
আমাদের রক্ত নতুন আগামী
তোমাদের নতুন দেশ হবে আমাদের দেশে
তোমাদের নতুন পৃথিবী হবে আমাদের পৃথিবী
যার বুকে দোয়েল, ঘুঘু, বুলবুলি
উড়ে যাবে গান গাইবে।
অননত্দ বিস্ময় পুষ্পের সম্ভারে
মাটিতে জেগে উঠবে সবুজ সোনালী ফসল।
সি্নগ্ধ সুবাস ছড়াবে আমাদের প্রিয় দেশে
তোমরা আমরা হবো চির চেনা আত্মার স্বজন
বাংলার আকাশ ইন্দ্রধনু রঙে মিশে যাবে
বনের কুঁড়ি গুলো পাঁপড়ি ছড়াবে
সোনালী আলোমাখা নতুন সকালের খোঁজে।
শরতের স্বচ্ছ চাঁদ নদীর বুকে জেগে উঠবে
রাঙা মাটির পথ ধরে
আমাদের উত্তরসূরীরা হেঁটে যাবে
আশ্বিনের সোনালী রোদে
গনত্দব্যের উদ্দেশ্য ট্রেনগুলো ছুটে যাবে
আজন্ম ভালোবাসার প্রিয়তম দাঁড়িয়ে থাকবে
কিষাণ কিষাণীর রূপ ধরে
স্বদেশের বুকে ফুটবে নতুন ফুল
তার বুকে আমরা সবুজ পাখি হয়ে হাসবো
আর বলবো আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম বলে
তোমরা আমাদেরকে দুঃখ দিলে
দেখো আমরা আজ স্বাধীন
আমাদের দেশ এই প্রিয় বাংলাদেশ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এফ, আই , জুয়েল # অনেক সুন্দর ।।
ভালো লাগেনি ২৭ ডিসেম্বর, ২০১২
আপনাকে ধন্যবাদ
ভালো লাগেনি ২৭ ডিসেম্বর, ২০১২
প্রিয়ম শ্রধাসিক্ত ভরে বলি , যুদ্দের পূর্ব এবং পরের অনেক অনেক সুন্দর ছবি একেছেন , দারুন লাগলো |
সূর্য আবৃত্তির জন্য সুন্দর একটা কবিতা। কবিতায় উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, যন্ত্রণা সবকিছু। অনেক ভাল লাগা রইল ।
সিয়াম সোহানূর এ এক কষ্টের আর্ত চিৎকার। সুন্দর বুননে সাজিয়েছেন কবি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
ডা. মো. হুসাইন আলী সুন্দর গল্পমুলক কবিতা ভালো লাগলো।
আহমেদ সাবের "আমি স্বাধীনতা চেয়েছিলাম বলে / তোমরা আমাকে দুঃখ দিলে " - দুঃখের বর্ণনা এবং আগামীর স্বপ্ন কবিতার মূল ভাবকে ছড়িয়ে কবিতার নান্দনিকতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে বলে আমার বিশ্বাস। তবে কবির লেখায় গভীরতা আছে এবং আশা করবো কবি তার প্রকাশে আরো কুশলী হবেন। সে যা হোক, কবিতা ভালো লেগেছে।
সালেহ মাহমুদ চমৎকার কবিতা।শুভ কামনা নিরন্তর।
শাহ আকরাম রিয়াদ কবিতাটি ইতিহাসভিত্তিক মনে হল.... যেনো কোন এক মুক্তিযোদ্ধার আত্মকাহিনী। ভাল লাগল।

২১ অক্টোবর - ২০১২ গল্প/কবিতা: ৯৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪